সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ০৪:০৯
ব্রেকিং নিউজ

আফগান সেনাদের কাছে ৭ সামরিক স্থাপনা হস্তান্তর করেছে যুক্তরাষ্ট্র

আফগান সেনাদের কাছে ৭ সামরিক স্থাপনা হস্তান্তর করেছে যুক্তরাষ্ট্র

উত্তরণবার্তা ডেস্ক : সেনা প্রত্যাহারের শেষ পর্যায়ে এসে আফগান সেনাবাহিনীর কাছে সাতটি সামরিক স্থাপনা হস্তান্তর করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানে দুই দশক ধরে চলা অভিযান শেষ করতে যাচ্ছে দেশটি। এর জের ধরে সেখান থেকে ফিরিয়ে নেয়া হচ্ছে মার্কিন সেনাসদস্য ও যুদ্ধ সরঞ্জামগুলো। খবর বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় কমান্ডের (সেন্টকম) তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে সাতটি সামরিক স্থাপনা হস্তান্তর করেছে। দেশটি থেকে ৯৫ শতাংশ মার্কিন সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম এর মধ্যেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আফগানিস্তান থেকে সি-১৭ পরিবহন উড়োজাহাজ ৯৮৪ বার বোঝাই করে নানা সরঞ্জাম যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে গেছে। এ ছাড়া ১৭ হাজার ৭৪টি সরঞ্জাম ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য সেনাবাহিনীর সরবরাহ সংস্থার কাছে নেয়া হয়েছে।

এদিকে অভিযান শেষ হলেও আফগানিস্তানে কমবেশি ৬৫০ জন মার্কিন সেনা অবস্থান করবেন। দেশটিতে অবস্থানরত মার্কিন কূটনীতিকদের নিরাপত্তা এবং কাবুল বিমানবন্দরের প্রতিরক্ষার জন্য তাঁদের জরুরি ভিত্তিতে সেখানে মোতায়েন রাখা হচ্ছে। চলতি বছরের ৩১ আগস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে চূড়ান্ত ধাপে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেনা সরিয়ে নেওয়ার চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরুর পর থেকে আফগানিস্তানে একের পর এক হামলা চালাচ্ছে তালেবানরা। এতে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানিও বাড়ে। এ হামলা ঠেকাতে আফগানিস্তানে মার্কিন বিমান হামলা চালিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় কমান্ডের কমান্ডার জেনারেল ফ্রাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি।

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে সংবাদ সম্মেলনে ম্যাকেঞ্জি বলেন, ‘আফগানিস্তানের সরকারি বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য বিমান হামলা বাড়ানো হয়েছে কয়েক দিন ধরে। এখন আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি, এই হামলা অব্যাহত রাখার। তালেবান যদি তাদের হামলা অব্যাহত রাখে, তবেই যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালাবে।’ আগামী ৩১ আগস্টের পরও আফগানিস্তানে বিমান হামলা অব্যাহত থাকবে কি না, এই প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি ম্যাকেঞ্জি। তিনি বলেন, সম্প্রতি একটি বড় পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে আফগানিস্তান সরকার। তালেবানের জয় অবশ্যম্ভাবী নয়, এর রাজনৈতিক সমাধানের সুযোগ রয়েছে।

এদিকে গত সোমবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আফগানিস্তানে জাতিসংঘের সহায়তা মিশন (ইউএনএএমএ)। সেখানে চলতি বছরের প্রথমার্ধে আফগানিস্তানে বেসামরিক মানুষের হতাহতের পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে। এক দশকের বেশি সময় আগে আফগানিস্তানে কার্যক্রম শুরু করে ইউএনএএমএ। এই সময়ের মধ্যে চলতি বছরেই দেশটি সর্বোচ্চ বেসামরিক মৃত্যু দেখতে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করছে সংস্থাটি। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালের প্রথমার্ধে আফগানিস্তানে ১ হাজার ৬৫৯ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ৩ হাজার ২৫৪ জন। গত বছরের তুলনায় এই সংখ্যা ৪৭ শতাংশ বেশি। এই হতাহতের মধ্যে গত মে ও জুনেই ৭৮৩ জন নিহত এবং ১ হাজার ৬০৯ জন আহত হয়েছে। ওই সময় থেকেই দেশটিতে তালেবানদের হামলা বেড়ে যায়।

চলতি বছরে সাধারণ মানুষের হতাহতের জন্য তালেবানের পাশাপাশি আফগান সেনা ও জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) দায়ী বলে ইউএনএএমএর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, ৪০ শতাংশ হতাহতের জন্য দায়ী তালেবান। আইএস ও অন্য সরকারবিরোধীরা দায়ী যথাক্রমে ৯ ও ১৬ শতাংশ। অপর দিকে বেসামরিক মানুষের হতাহতের ঘটনার জন্য ২৫ শতাংশ দায়ী আফগান সেনারা। এ ছাড়া ‘ক্রসফায়ারসহ’ অন্য কারণে হতাহত হয়েছে ১১ শতাংশ।
উত্তরণবার্তা/এআর

 

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK