শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
ঢাকা সময়: ০২:০২
ব্রেকিং নিউজ

কচুরিপানা থেকে নান্দনিক পণ‌্য যাচ্ছে বিদেশেও

কচুরিপানা থেকে নান্দনিক পণ‌্য  যাচ্ছে বিদেশেও

উত্তরণ বার্তা প্রতিবেদক : গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার মদন পাড়া গ্রাম। এই প্রত্যন্ত গ্রামের ঘরে ঘরে ফেলনা কচুরিপানা দিয়ে তৈরি হচ্ছে হরেক রকমের ঘর সাজানোর উপকরণ। এই গ্রামের নারীরা তাদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় ফেলনা কচুরিপানা থেকে তৈরি করছেন ফুলদানি,ফুলের টব, মাদুর, ঝুড়িসহ নানান জিনিস। আর এসব নান্দনিক জিনিস তৈরি করে তাদের স্বল্প আয়ের সংসারকে তারা এগিয়ে নিচ্ছেন।

মদনের পাড়া গ্রামের সুভাষ চন্দ্র ঢাকা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে চলে আসেন তার শ্বশুরবাড়ি ভাষার পাড়ায়। তার নেয়া প্রশিক্ষণ কাজে লাগাতে কয়েক নারীকে প্রশিক্ষণ দেন তিনি। তারপর ভাষাপাড়া, কঞ্চিপাড়া, মদনেরপাড়া ও সদর উপজেলার দাড়িয়াপুর ও তালতলা গ্রামের আড়াইশ নারীকে নিয়ে শুরু করেন এই কাজ।

এরপর থেকে ওইসব গ্রাম জুড়ে বেশ কিছু বাড়ির আঙ্গিনায় নারীরা তৈরি করছেন শুকনো কুচুরিপানা। এরপর তা দিয়ে তৈরি করেন নানান ঘর সাজানো জিনিস। ৪ গ্রামের আড়াইশ দরিদ্র নারী যুক্ত হয়েছেন এই কাজের সঙ্গে। কলেজ পড়ুয়া হাসনা হেনা বলেন,  ‘পড়ালেখার পাশাপাশি আমি  বাড়িতে বসে এই কাজ করি। দিনে ৫/৬টা পর্যন্ত ফুলদানি তৈরি করতে পারি। তাতে আমার প্রতিদিনের আয় হয় ২শ থেকে ২৫০ টাকা।’

গৃহিনী হালিমা বেগম জানান, তার স্বামী জমিতে কাজ করেন। চলতি শীতকালীন সময়ে তার স্বামীর কাজ করা সম্ভব হয়নি। হালিমার আয়ের টাকা দিয়ে সংসার চলেছে। এ কাজ করে প্রতিদিন গড়ে অন্তত ২ থেকে ৩ শ টাকা আয় হয় তার। এই টাকায় তাদের সংসারে যোগান দেয়। এরকমভাবে আপাতত আড়াইশ দরিদ্র নারী এই কাজের সাথে সম্পৃক্ত । তাদের স্বামীর আয় রোজগারের পাশাপাশি শুকনো পানা দিয়ে তৈরি এই কাজ তাদের সংসারে উন্নতি এনে দিয়েছে। এতে খুশি গ্রামের মানুষও।

এই কাজের উদ্যোক্তা সুভাষ চন্দ্র জানান,তার পুঁজি কম। সে কারণে তিনি তার এই কাজকে সম্প্রসারণ করতে পারছেন না। পানার এই ঘর সাজানো জিনিপত্রের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। বিদেশেও চাহিদা কম নয়। তবে সরকারি সহযোগিতা পেলে নিজের এই হস্তশিল্প কারখানাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন।

ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম পারভেজ জানান, শুকনো পানা এক সময় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হতো। আবার গো-খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু এখন সেই পানা দিয়ে তৈরি হচ্ছে ফুলদানিসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিস। এই কাজ পেয়ে এই গ্রামের এলাকার নারীদের যেমন উপকার হচ্ছে,তেমনি এই গ্রামের তৈরি সামগ্রী দেশ থেকে রপ্তানি হচ্ছে আমেরিকায়। এটা গর্বের বিষয়।
উত্তরণ বার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK