উত্তরণ বার্তা প্রতিবেদক : কাউকে টাকা ধার দিয়ে কিংবা ধারের টাকা উদ্ধার করতে গিয়ে জুতার তলা ক্ষয় করে ফেলেছেন। টাকা ফেরত চাইতে চাইতে হয়তো ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। বুঝতে পারছেন না আপনার কি করা উচিত। সহজ সমাধান হলো বেশি অঙ্কের টাকা হলে আপনি আইনের আশ্রয় নিতে পারেন।
পাওনা টাকা উদ্ধারে আপনি সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করতে পারেন। চাইলে ফৌজদারি মামলাও করা যেতে পারে। মূলত টাকার পরিমাণের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন আদালতে মামলা দায়ের করা যেতে পারে। টাকার পরিমাণের উপর ভিত্তি করে কোর্ট ফিস; মামলা দাখিল; সমন জারিসহ আইনজীবীর খরচ আপনাকে বহন করতে হবে। তবে ধার বা পাওনা টাকার পরিমাণ যত বেশিই হোক না কেনো কোর্ট ফিস কখনোই ৫০ হাজার টাকার বেশি হবে না।
‘দ্যা সিভিল কোর্টস (সংশোধিত) অ্যাক্ট, ২০২১’অনুযায়ী দেওয়ানী মোকদ্দমার ক্ষেত্রে একজন সহকারী জজ দুই লাখ টাকা থেকে ১৫ লাখ টাকার মোকদ্দমার বিচারিক কাজ করতে পারেন। একইভাবে সিনিয়র সহকারী জজের বিচারিক এখতিয়ার চার লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৫ লাখ টাকা এবং আপিল শুনানির ক্ষেত্রে জেলা জজের এখতিয়ার পাঁচ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে পাঁচ কোটি টাকা করা হয়েছে।
দেওয়ানী মামলা করার আগে আপনাকে স্মরণ রাখতে হবে কম টাকার ক্ষেত্রে আদালতের আশ্রয় না নেয়ায় ভালো। তাছাড়া ধারের টাকা উদ্ধারের ক্ষেত্রে আপনি যদি ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পের মাধ্যমে চুক্তি না করে থাকেন সেক্ষেত্রে আইনি আশ্রয় পেতে আপনার বেশ বেগ পেতে হবে।
আর ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে দণ্ডবিধির ৪০৫ ও ৪১৫, ৪১৭ ধারার আলোকে অভিযোগ এনে সিআর (নালিশি) মামলা দায়ের করা যায়। এছাড়া ক্ষেত্র বিশেষে থানায় এফআইআর করা যেতে পারে। ফৌজদারির ক্ষেত্রে কোর্ট ফিস দিতে হয় না এবং অভিযোগকারী কোনো আর্থিক ক্ষতিপূরণ পান না। তবে শাস্তির ভয়ে জামিন নিতে সাধারণত আসামি অভিযোগকারীর সঙ্গে মীমাংসার করার চেষ্টা করেন।
অনেক ক্ষেত্রে বড় ধরনের লেনদেনের ক্ষেত্রে ‘সেট অফ’এবং ‘ কাউন্টার ক্লেইম’বিষয়টি বেশ আলোচিত হয়ে থাকে। শব্দ দুটির ব্যাখ্যা অনেকেই বুঝতে পারেন না। মূলত ‘ সেট অফ’ অর্থ হলো দাবি সমন্বয়ের বিধান। যেমন অর্থ মামলার ক্ষেত্রে বাদি আদালতকে বললো- আমি মিস্টার অমুকের কাছে ৫ লাখ টাকা পাই। মি. অমুক তথা বিবাদী বললো- আমিও তার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা পাই। এমন ক্ষেত্রে আদালত উভয়ের ক্ষেত্রে দাবির সমন্বয় করে মামলা নিষ্পত্তি করবেন। ‘আর কাউন্টার ক্লেইম’অর্থ মামলায় বাদির থেকে যদি বিবাদি বেশি অর্থ পেয়ে থাকেন।
উত্তরণ বার্তা/এআর