শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
ঢাকা সময়: ১৫:৪৯

সু চির বিরুদ্ধে আরও দুই অভিযোগ দায়ের

সু চির বিরুদ্ধে আরও দুই অভিযোগ দায়ের

উত্তরণবার্তা আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত মিয়ানমারের নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চির বিরুদ্ধে আরও দুইটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সোমবার দেশটির একটি আদালতে অভিযোগ দুটি দায়ের করা হয়। খবর রয়টার্সের। সু চির আইনজীবী মিন মিন সোয়ে বলেন, সু চি নেপিদোতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আদালতের শুনানিতে অংশ নেন। ভিডিওতে তাকে সুস্থ দেখা গেছে।
 
অভ্যুত্থানের পর সু চিকে আটক করে তার বিরুদ্ধে নিয়ম ভেঙে ওয়াকিটকি কেনা ও করোনাভাইরাস রোধে নিষেধাজ্ঞা ভেঙে দুর্যোগ ডেকে আনার মামলা দেওয়া হয়েছিল। সোমবার সু চি বিরুদ্ধে নতুন করে ঝুঁকিপূর্ণ ও জনশান্তি বিনষ্টকারী তথ্য প্রকাশে উসকানির অভিযোগ আনা হয়েছে। সেইসঙ্গে টেলিযোগাযোগ আইনের অধীনে আরেকটি অভিযোগ আনা হয়েছে। 
 
আগামী ১৫ মার্চ সু চির শুনানির পরবর্তী তারিখ নির্ধারিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী। মিয়ানমারে গত ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পায় এনএলডি। তবে এনএলডি নিরঙ্কশ জয় পেলেও সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ভোটে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিল। 
 
গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে ওইদিন ভোরে স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ এনএলডির শীর্ষ বেশ কিছু নেতাকে গ্রেপ্তারের পর এক বছরের জন্য মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা জারি করে সেনাবাহিনী। ক্ষমতায় বসেন সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং লাইং। সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের পর গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর ও গ্রেপ্তার নেতাদের মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে নামে সাধারণ মানুষ। তাদের দমন করতে কাঁদুনে গ্যাস ও গুলি ছুড়ছে সেনাবাহিনী। গত রোববার জান্তা সরকারবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের গুলি ও সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হন। পুলিশের ছোড়া গুলি, কাঁদানে গ্যাস, স্টান গ্রেনেড ও রাবার বুলেটে আহত হন অনেকে। তবে বিক্ষোভকারীদের দাবি, নিহতের সংখ্যা আরও বেশি। হতাহতের ঘটনার পর সেনাবিরোধী আন্দোলনে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে মিয়ানমার। ফলে ব্যাপক মাত্রায় দমন-পীড়নের পথ বেছে নিয়েছে জান্তা সরকার।
 
দাঙ্গা পুলিশের পাশাপাশি রোববার থেকে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী। সশস্ত্র সেনা-পুলিশ ইয়াঙ্গুন, মান্দালয়, দাউই, মায়িক, বাগো, পোকোক্কুসহ বিভিন্ন শহরে প্রতিবাদকারীদের ওপর সরাসরি গুলি চালিয়েছে। গত রোববার রক্তক্ষয়ী সহিংসতার পর সোমবার সকাল থেকে ফের রাস্তায় নামেন বিক্ষোভকারীরা। ভিডিও কনফারেন্সে আদালতের শুনানিতে সু চি হাজির হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইয়াঙ্গুনে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার শেল ব্যবহার করেছে।  একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, ইয়াঙ্গুনের যে চৌরাস্তায় আগের দিন নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ হয়েছিল সোমবার সেখানে পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর প্রায় ১০টি গাড়ি মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের বহরে রয়েছে জলকামানও। থার এনজে নামে একজন বিক্ষোভকারী বলেছেন, এই সুন্দর দেশটা আমাদের। তবে এখন আমরা ঘরে আর নিরাপদ নই। এখন আমরা বন্দুকের শব্দ শুনছি। পুলিশের টিয়ার শেলে আমরা সরে যেতে বাধ্য হয়েছি। তবে যাই হোক না কেন, আমাদের প্রতিবাদ অব্যাহত রাখতে হবে। 
উত্তরণবার্তা/সাব্বির

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK