শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
ঢাকা সময়: ০৫:০৬
ব্রেকিং নিউজ

খাদ্য মজুত বাড়াতে বিশেষ উদ্যোগ

খাদ্য মজুত বাড়াতে বিশেষ উদ্যোগ

উত্তরণ বার্তা প্রতিবেদক : প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে চলতি অর্থবছর খাদ্য সংগ্রহের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল, তা অর্জিত না হওয়ায় সরকার দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিদেশ থেকে খাদ্য আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে। বর্তমান মজুতের অতিরিক্ত আরও  ১৪৪৯৫২৯ মেট্রিক টন চাল-গম সংগ্রহ করতে হবে। এ অবস্থায় খাদ্য অধিদপ্তর আগামী জুন ২০২১ পর্যন্ত খাদ্যশস্যের চাহিদা ও বর্তমান মজুত পরিস্থিতি পর্যালোচনা প্রতিবেদন অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির কাছে উপস্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে।

১৫ ফেব্রুয়ারি সোমবার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক সংগ্রহ শাখার একজন কর্মকর্তা বলেন, জনসাধারণের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখার জন্য বর্তমান অর্থবছরের বাজেটে খাদ্যশস্যের মোট চাহিদা ধরা হয়েছিল ৩১,৩৬,৪০০ মেট্টিক টন যার মধ্যে ২৪,৪১,৯০০ মেট্রিক টন চাল এবং ৬,৯৪,৫০০ মেট্রিক টন গম। কিন্তু সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ায় এবং সরকারি সংরক্ষণাগারে পর্যাপ্ত মজুত না থাকায় টিআর, কাবিখা খাতের খাদ্যশস্য টাকায় রূপান্তর করা হয়েছে।  এ পরিপ্রেক্ষিতে খাদ্যশস্যের সংশোধিত চাহিদা ধরা হয়েছে ২৪,৫৫,০০৭ মেট্টিক টন।  এর মধ্যে চাল ১৮,৬৪,৮২৯ মেট্রিক টন এবং গম ৫,৯০,১৭৮ মেট্রিক টন। সূত্র জানায়, বর্তমান অর্থবছরে জুলাই ২০২০ থেকে জানুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত চাল ১০,৩৮,৯১০ মেট্টিক টন এবং গম ৩,০০,৭৩৫ মেট্টিক টন অর্থাৎ মোট খাদ্যশস্য বিতরণ করা হয়েছে ১৩,৩৯,৬৪৫ মেট্টিক টন।  আগামী ৩০ জুন ২০২১ তারিখ পর্যন্ত আনুমানিক আরও ৮,২৫,৯১৯ মেট্টিক টন চাল ও ২,৮৯,৪৪৩ মেট্টিক গম বিতরণ করতে হবে।

উল্লেখ্য, গত ১ ফেব্রুয়ারি সরকারি সংরক্ষণাগারে চাল মজুত ছিল ৫,১৯,০৬১ মেট্টিক টন এবং গম ১,৪৬,৭৭২ মেট্টিক টন। সেই হিসেবে বর্তমান অর্থবছরে বিতরণের জন্য বর্তমান মজুতের অতিরিক্ত আরও ৩,০৬,৮৫৮ মেট্টিক টন চাল এবং ১,৪২,৬৭১ মেট্টিক টন গম প্রয়োজন হবে। এছাড়া আগামী ৩০ জুন নিরাপত্তা/সমাপ্তি মজুত ৮.০০ লাখ মেট্টিক টন চাল ও ২.০০ লাখ মেট্টিক টন গম রাখা আবশ্যক। সেই হিসেবে বর্তমান অর্থ বছরে নিট চাহিদার পরিমাণ (৮,০০,০০০+৩,০৬,৮৫৮)=১১,০৬,৮৫৮ মেট্টিক টন চাল ও (২,০০,০০০+১,৪২,৬৭১) =৩,৪২,৬৭১ মেট্টিক টন গম অর্থাৎ এ অর্থবছরে আরও আনুমানিক ১৪,৪৯,৫২৯ মেট্টিক টন খাদ্যশস্য সংগ্রহ করতে হবে।

সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে সরকার-টু-সরকার (জি-টু-জি), আন্তর্জাতিক দরপত্র এবং সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) চাল ও গম সংগ্রহের জন্য প্রয়োজনীয় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে। সর্বশেষ গত ৬ ফেব্রুয়ারির তথ্য অনুযায়ী ৫টি আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ভারত থেকে ২ লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল এবং ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল মিলিয়ে ২ লাখ ৫০ হাজার টন চাল আমদানি চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে।  এরই মধ্যে ভারত থেকে ৪৩ হাজার ৮৭৯ মেট্রিক টন চাল দেশে এসে পৌঁছেছে।  আগামী ২২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাকি চাল ভারত থেকে দেশে আসবে।

অন্যদিকে, জিটুজি ভিত্তিতে ৩ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি করা হবে।  এর মধ্যে ভারত থেকে ১ লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল এবং ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল রয়েছে। এ চাল আগামী ৬ মার্চের মধ্যে দেশে আসবে। এছাড়া মিয়ানমার থেকে ১ লাখ মেট্রিক টন আতপ চাল আমদানির বিষয় প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং ভারতে থেকে আরও ১ লাখ টন চাল আমদানির জন্য অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে। ভারত সরকারের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির আলোকে আগামী ৬ মার্চের মধ্যে প্রায় দেড় লাখ মেট্রিক টন চাল দেশে আসবে।

এছাড়া আন্তর্জাতিক দরপত্র ও সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ১ লাখ ৫০ হাজার টন গম আমদানি করা হবে। এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, দেশের খাদ্য পরিস্থিতির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা হচ্ছে। নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এবার বাৎসরিক খাদ্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। এ কারণে এরই মধ্যে বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। আশা করছি দেশে কোনো ধরনের খাদ্য সমস্যা হবে না।
উত্তরণ বার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK