বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ১২:২৬

শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার রায় ৪ ফেব্রুয়ারি

শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার রায় ৪ ফেব্রুয়ারি

উত্তরণ বার্তা প্রতিবেদক : সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার রায় প্রদানের দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি। এ মামলায় সাবেক এমপি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৩৪ আসামির জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন আদালত।

বুধবার বিকেলে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের শেষ দিনে সাতক্ষীরার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ুন কবির আসামিদের আগের জামিন বাতিল করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জামিন বাতিল হওয়াদের মধ্যে রয়েছেন— কলারোয়ার দুইবারের সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা আক্তারুল ইসলাম, সাতক্ষীরা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আব্দুস সাত্তার, সুপ্রিম কোর্টের অ্যাড. আব্দুস সামাদ, তিনজন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন, রকিবুল ইসলাম ও রবিউল ইসলাম এবং বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী। এ মামলায় অভিযুক্ত ৫০ আসামির একজন টাইগার খোকন অন্য মামলায় জেলহাজতে আটক রয়েছে। পলাতক রয়েছে সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল কাদের বাচ্চুসহ ১৫ জন।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে এ সময় অংশ নেন— অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল এসএম মুনীর, ডেপুটি এটর্নি জেনারেল শাহীন মৃধা, সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ, সিনিয়র অ্যাড. হায়দার আলী, অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. আব্দুস সামাদ, অ্যাড. নিজামউদ্দিন প্রমুখ। আসামিপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন— বাংলাদেশ হাইকোর্টের অ্যাড. শাহানারা আক্তার বকুল, অ্যাড. আব্দুল মজিদ (২), অ্যাড. শফিকুল ইসলাম, অ্যাড. তোজাম্মেল হোসেন তোজাম, অ্যাড. মিজানুর রহমান পিন্টু, অ্যাড. অসীম কুমার মণ্ডল, অ্যাড. কামরুজ্জামান ভুট্টো  প্রমুখ।

রাষ্ট্রপক্ষের এসএম মুনীর আদালতে ২০ জন সাক্ষীর জবানবন্দি তুলে ধরে জানান, সাক্ষীদের বক্তব্যে সকল আসামি দোষী প্রমাণিত হয়েছে। ন্যায়বিচার হলে সকল আসামি সর্বোচ্চ শাস্তি পাবেন। অপরদিকে, বিবাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. শাহানারা আক্তার বকুল ও অ্যাড. আব্দুল মজিদ জানান, মামলার এজাহার, পুলিশের অভিযোগপত্র এবং সাক্ষীদের জবানবন্দির মধ্যে তথ্যগত ব্যাপক গরমিল ও অসংলগ্নতা রয়েছে। সাক্ষীরা কোনোভাবেই আসামিদের দোষী প্রমাণ করতে পারেননি। আইনজীবীরা আরও জানান, ঘটনার দিন সাবেক দুইবারের সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিব কলারোয়ায় উপস্থিত ছিলেন এমন কোনো প্রমাণও তারা দাঁড় করতে পারেননি। ন্যায়বিচার হলে সকল আসামি খালাস পাবেন।

উল্লেখ্য, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরায় মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে হাসপাতালে দেখে মাগুরা ফিরে যাবার পথে কলারোয়ায় সন্ত্রাসীদের হামলা শিকার হন। এতে শেখ হাসিনা অক্ষত থাকলেও তার সফরসঙ্গী ফাতেমা জাহান সাথী, জোবায়দুল হক রাসেল, ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবর রহমান, শহিদুল হক জীবন, আবদুল মতিনসহ অনেকেই আহত হন। এ সময় বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও হামলার শিকার হন। এ ঘটনায় কলারোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. মোসলেমউদ্দিন ২৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এ মামলা থানায় রেকর্ড না হওয়ায় তিনি নালিশি আদালত সাতক্ষীরায় মামলাটি করেন। পরবর্তীতে এ মামলা খারিজ হয়ে গেলে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর ফের মামলাটি পুনরুজ্জীবিত হয়। এসময় তদন্তকারী কর্মকর্তা সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন।
উত্তরণ বার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK
আরও সংবাদ