উত্তরণবার্তা প্রতিবেদক : মোংলা পৌর শহরের জয়বাংলা সড়কের বাসিন্দা মো. সুলতানের ছেলে তারেক বিন সুলতান প্রায় এক বছর আগে একটি কাকের বাচ্চা তাদের গাছের নিচে আহতাবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। এরপর বাচ্চাটি বাসায় নিয়ে চিকিত্সা করেন। প্রায় ১৫ দিনের মধ্যে কাকটি সুস্থ হয়ে উঠলে তারেক বাচ্চাটি ছেড়ে দেন। ভেবেছিলেন সুস্থ হওয়ার পর পাখিটি তার আপন ঠিকানায় ফিরে যাবে। কিন্তু ঘটনা ঘটল উলটো। কাকটি ফিরে আসে। ভালো বন্ধুত্ব সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাদের মধ্যে। এরপর প্রায় এক বছর হলেও কাকটি তারেককে ছেড়ে যায়নি।
জানা যায়, কাক আলাদা আলাদা মানুষের মুখের আকৃতি মনে রাখতে পারে। এছাড়া অন্যান্য প্রাণীর অনুকরণ করার পাশাপাশি কাক মানুষকেও অনুকরণ করতে পারে। কাক সাধারণত সারা জীবন একই সঙ্গীর সঙ্গে থাকে। তবে খুব সহজে পোষ না মানা কাকই এবার মানুষের বন্ধু হয়ে গেল। সম্প্রতি কাক ও তারেকের বন্ধুত্বের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, তারেকের মুখে কোনো খাবার নিয়ে কাকটিকে খেতে দিলে সে তার মুখ থেকে সেই খাবার খাচ্ছে। এমনকি তারেক কোথাও গেলে কাকটিও তাকে অনুসরণ করে।
তারেক বিন সুলতান বলেন, ‘মানবিক দায়িত্ব থেকে আহত কাক পাখিটিকে চিকিত্সা দিই। তবে বন্ধুত্বের ব্যাপারে ভাবিনি। কাকটি প্রায় এক বছর ধরে আমার সঙ্গেই আছে। আমি তাকে সেদ্ধ ডিম, মাছ ও মাংস খেতে দিই। সারা দিন আকাশে ঘুরে বেড়িয়েও আবার আমার বাসায় চলে আসে।’ তিনি বলেন, পাখিটিকে আটকে রাখতে চাই না। বরং উড়ে যাওয়ার জন্য পাখিটিকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে পূর্ব সুন্দরবনের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, ‘বন্যপ্রাণীরা সব সময় তার নিরাপদ স্থান ও খাদ্য চায়। সঠিকভাবে তা পেলে প্রাণীরাও মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চায়। কাক কখনো কখনো মানুষের পোষ মানে—উল্লেখ করে তিনি বলেন, কাক একটি স্মার্ট পাখি। তারা অন্য কাকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। একটি কাক মারা গেলে সেখানে সম্ভ্যাব্য হুমকি খুঁজতে তারা সেই অঞ্চল তদন্ত করে থাকে।
উত্তরণবার্তা/এআর