শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ২০:০৭
ব্রেকিং নিউজ

গোপালগঞ্জে ১১ হাজার ৫৭০ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক পাবেন কৃষি প্রণোদনা

গোপালগঞ্জে ১১ হাজার ৫৭০ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক পাবেন কৃষি প্রণোদনা

উত্তরণবার্তা প্রতিবেদক : জেলায় ৯টি ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১ কোটি ১৬ লাখ ১৮ হাজার ৪০০ টাকার কৃষি প্রণোদনা বরাদ্দ দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। জেলার ৫ উপজেলার ১১ হাজার ৫৭০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক কৃষি এই প্রণোদনা পাবেন।
প্রণোদনার মাধ্যমে জেলায় গম, ভূট্টা, সরিষা, সূর্য্যমুখী, খেসারী, মসুর, পেঁয়াজ, চিনাবাদাম ও মুগের আবাদ বাড়িয়ে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনা করেছে সরকার। কৃষি প্রণোদনার বরাদ্দ পাওয়ার পর গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এটি বিতরণের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ইতিমধ্যে তারা এ ব্যাপারে জেলা কৃষি প্রণোদনা বাস্তবায়ন কমিটির সাথে সভা করেছে। সভায় ১১ হাজার ৫৭০ বিঘা জমিতে ৯টি ফসলের আবাদ বাড়িয়ে ফসল উৎপাদান বৃদ্ধির জন্য ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে বিনামূল্যে বীজ ও সার প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এটি বাস্তবায়নে কাজ করছে।
গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, কৃষি প্রণোদনার আওতায় জেলার ৫ উপজেলার ১১ হাজার ৫৭০ জন কৃষককে ৯টি ফসলের  ৮৩ হাজার ৩২০ কেজি বীজ, ১ লাখ ২০ হাজার ২০০ কেজি ডিএপি ও ১ লাখ ৪ হাজার ৯৫০ কেজি এমওপি সার বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। বীজ ক্রয়ে ৭৮ লাখ ১০০ টাকা ও সার ক্রয়ে ৩০ লাখ ৪৭ হাজার ১৫০ টাকা, পরিবহন ব্যয় ৪ লাখ ৬২ হাজার ৭০৫ টাকা অন্যান্য ব্যয় ৩ লাখ ৮ হাজার ৪৪৫ টাকা এবং ৭ লাখ ৭১ হাজার ১৫০ টাকা ধরা হয়েছে। এরমধ্যে গোপালগঞ্জ সদরে ২ হাজার ৬৭০ জন, মুকসুদপুরে ২ হাজার ৪৬০ জন, কাশিয়ানীতে ২ হাজার ২৭০ জন, কোটালীপাড়ায় ১ হাজার ৯৪০ জন ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় ২ হাজার ২৩০ জন কৃষক কৃষি প্রণোদনা পাবেন।
কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিটুল রায় বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি এক ইঞ্চি জমিও আনাবাদী না রাখার আহবান জানিয়েছেন। তাই কৃষককে আবাদ বাড়িয়ে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্য আমরা উদ্বুদ্ধ করছি। আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কৃষকের কাছে যাচ্ছেন। তারা শাক, সবজিসহ সব ফসলের আবাদ বৃদ্ধিতে কৃষককে পরামর্শ দিচ্ছেন। করছেন সহযোগিতা। এছাড়া আমরা কৃষি প্রণোদনার মাধ্যমে ৯টি ফসলের আবাদ বাড়িয়ে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এতে কৃষকের মধ্যেও ফসল আবাদ বৃদ্ধির উৎসাহ সৃষ্টি হয়েছে। কোটালীপাড়া প্রধানমন্ত্রীর নিজ নির্বাচনী এলাকা। তাই প্রধানমন্ত্রীর ওপর এই উপজেলার মানুষের আস্থা অবিচল। আশা করছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির আহবান সফল হবে।
গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক ড. অরবিন্দ কুমার রায় বলেন,  গোপালগঞ্জ কৃষি নির্ভর জেলা। এই জেলা খাদ্য উদ্বৃত্ত জেলা। এই জেলায় সবেচেয় বেশি হাইব্রিড ধান উৎপাদন হয়। এছাড়া পাট, মসুর, খেসারী, গম, সুর্য্যমুখী, পেঁয়াজ, ভূট্টা, সরিষা, চিনাবাদম, মুগ, ছোলা, মটর, রসুন, কাঁচা মরিচ, শাক, সবজিসহ সব ধরণের ফসল ফলে। গোপালগঞ্জের মাটি খুবই উর্বর। তাই এখনে প্রতিটি ফসলের ফলন বেশ ভাল হয়। সরকার ২০২২-২৩ রবি মৌসুমে ৯টি ফসলের আবাদ বাড়িয়ে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১১ হাজার ৫৭০ জন কৃষককে ১ কোটি ১৬ লাখ ১৮ হাজার ৪০০ টাকার কৃষি প্রণোদনা দিয়েছে। এই বরাদ্দ পাওয়ার পর আমরা জেলা কৃষি প্রণোদনা বাস্তবায়ন কমিটির সাথে সভা করেছি। কমিটির সভাপতি ও সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহিী কর্মকর্তাদের অনুকূলে অর্থছাড় করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা এটি বাস্তবায়ন করছি। কৃষকের কাছে বিনামূল্যে প্রণোদনার বীজ সার পৌঁছে দিতে কাজ চলছে।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরা ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা পার্বতী বৈরাগী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবানে সাড়া দিয়ে কৃষক চাষাবাদ বৃদ্ধিতে ব্যাপক আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তারা রবি মৌসুমের শুরুতে শীতের আগাম শাক, সবজি আবাদ করেছে। শাক, সবজি বিক্রি করে তারা আয় করছেন। ক্ষেত থেকে শাক বিক্রি শেষে করে সরিষা, খেসারী, মসুর সহ অন্যন্য ফসল চাষাবাদ করছেন। চাষাবাদ বৃদ্ধি করতে কৃষকের আগ্রহ পরিলক্ষিত হচ্ছে।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কুশলী গ্রামের কৃষক আবু জাফর (৪৫) বলেন, শেখ হাসিনার সরকার কৃষিবান্ধব সরকার। তাই আগে থেকেই তিনি ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য উদ্যোগ নিয়েছে। আমাদের কৃষি প্রণোদনা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে তা বাস্তবায়ন করছেন। এই জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাই। তার আহবানে সারা দিয়ে এক ইঞ্চি জমিও আমি ফেলে রাখিনি। সব জায়গায় ফসল ফলাচ্ছি। এই ধারা অব্যাহত রেখে দেশের ফসল উৎপাদন বৃদ্দিতে ভূমিকা রাখব ইনশাল্লাহ।

উত্তরণবার্তা/দীন

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK
আরও সংবাদ