শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
ঢাকা সময়: ০২:৫৪
ব্রেকিং নিউজ

ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কঠিন পরিস্থিতির মুখে পুতিন

ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কঠিন পরিস্থিতির মুখে পুতিন

উত্তরণবার্তা ডেস্ক : দীর্ঘ সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দেশ ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ চালাচ্ছে রাশিয়া। যুদ্ধে ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি অঞ্চল দখলও করে নিয়েছে রুশ সেনারা। এসব অঞ্চলের মধ্যে ডোনেটস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসন- এই চার অঞ্চলকে ‘গণভোটের’ মাধ্যমে রাশিয়ার অংশ হিসেবে ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। এরপর তিনি সতর্ক করেছেন এসব অঞ্চলে হামলা হলে তা রাশিয়ার ওপর হামলা হিসেবেই বিবেচিত হবে।

কিন্তু ইউক্রেন এই অন্তর্ভুক্তিকে শুধু অস্বীকারই করছে না বরং এসব এলাকায় হামলা করে তাদের ভূমি পুনরুদ্ধারও করছে। এরই মধ্যে ইউক্রেনীয় বাহিনী রুশ সেনাদের কবল থেকে বেশ কিছু এলাকা পুনরুদ্ধার করেছে। সেসব জায়গায় পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে রুশ সেনারা। সেখানে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছে রাশিয়া। এমন পরিস্থিতিতে পুতিনের সামনে এখন বিকল্প কী? তিনি কি দখল ছেড়ে দেবেন নাকি যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন?
অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্স কলেজের সেন্টার ফর ডিফেন্স স্টাডিজের সিনিয়র গবেষক ম্যাথিউ সাসেক্স, যিনি রাশিয়ার রাজনীতি এবং পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে গবেষণা করেছেন, অস্ট্রেলিয়া ভিত্তিক দ্য লোওয়ি ইন্সটিটিউটের এক সাময়িকীতে সম্ভাব্য কয়েকটি পথের কথা উল্লেখ করেছেন যেগুলো পুতিন নিতে পারেন।

তার মতে পুতিন এখন যেটা করতে পারেন তার মধ্যে রয়েছে:-

১. ইউক্রেনে ব্যাপকভাবে সহিংসতা বাড়ানো এবং রাশিয়ার ‘আক্রমণাত্মক সামরিক ডকট্রিন বা কৌশল’ প্রয়োগ, যেমন: শত্রু বাহিনীকে আটকে রাখা, শহরগুলোকে জিম্মি করে রাখা, নির্বিচারে বোমাবর্ষণ করে প্রতিরোধ গুড়িয়ে দেওয়া। তবে এর সুবিধা এবং অসুবিধা তিনি উল্লেখ করেছেন।

সুবিধা: খুব দ্রুততার সঙ্গে যুদ্ধে জয় লাভ করা, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে পটভূমি থেকে সরিয়ে ফেলা, পুতিনের ঐক্যবদ্ধ ‘রাশিয়ার’ যে জাতীয়তাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি তা অর্জন।

অসুবিধা: এর ফলে ভয়াবহভাবে বেসামরিক মানুষের জীবন যাবে। ইউক্রেনে বিদ্রোহ আরও মাথাচাড়া দেবে। আন্তর্জাতিক ক্ষোভ বাড়বে যেটা রাশিয়াকে একঘরে করে দিতে পারে, রাশিয়ার অর্থনীতি ১৯৯০ সালের মধ্যবর্তী সময়ের চেয়েও খারাপের দিকে যেতে পারে, এবং দেশের মধ্যে থেকেই পুতিনের ক্ষমতা হুমকির সম্মুখীন হতে পারে।

২. মুখ রক্ষার্থে শান্তির কথা বলে বিজয় ঘোষণা

সুবিধা: সাময়িকভাবে পুতিন চরম বিশৃঙ্খল একটি পরিস্থিতি থেকে সরে আসতে পারবেন যেটা তিনিই তৈরি করেছেন। ইতিবাচক কিছু বিষয় ঘটতে পারে যেমন ডোনেটস্ক এবং লুহানস্ক মোটামুটিভাবে স্বাধীন অঞ্চলের মর্যাদা পেতে পারে এবং ইউক্রেন একটি ‘সেমি নিউট্রাল’ অবস্থান নিতে পারে। সেই সাথে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হতে পারে।

অসুবিধা: পুতিনের ইমেজ দেশে এবং আন্তর্জাতিকভাবে খারাপ হবে। রুশরা তার বর্ণনায় ‘বিজয়’ বিশ্বাস করবে না। এবং পশ্চিমা নেতারা বুঝে যাবেন যে তিনি আসলে কতটা দুর্বল।

ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলে রাশিয়াকে পিছু হটতে দেখা গেলেও তাদের পক্ষ থেকে পাল্টা হামলার তেমন কোনও পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।

যদিও রাশিয়া সৈন্য ঘাটতি মেটাতে তিন লাখ রিজার্ভ সৈন্য ডাকার ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু শুরু থেকেই পুরো প্রক্রিয়া যেভাবে বিশৃঙ্খল হয়ে পড়েছে তাতে করে প্রশ্ন উঠছে এই রিজার্ভ সৈন্য তলব করে রাশিয়া যুদ্ধের পরিস্থিতি কতটা ঘোরাতে পারবে। সূত্র: বিবিসি বাংলা

উত্তরণবার্তা/ডেল

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK