উত্তরণ বার্তা আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফ্রান্সে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় বিক্ষোভ করছে সংবাদমাধ্যমের কর্মী ও সাধারণ মানুষ। দেশটির নিম্নকক্ষে পুলিশকে সুরক্ষা দেওয়া সংক্রান্ত একটি আইনের মাধ্যমে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে, এমন অভিযোগে বিক্ষোভ দেখিয়েছে মানুষ। এ পর্যন্ত ৪৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে সংবাদকর্মীদের সংঘাতে প্রায় ১৬ জন পুলিশও আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় দেশটিতে এমন বিক্ষোভ নজীরবিহীন। পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘাতে জড়িয়েছে সংবাদকর্মী ও সাধারণ মানুষ। পুলিশও তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। ফ্রান্সের পুলিশ কয়েকদিন আগে দেশটির রাজধানী প্যারিসের রাস্তা থেকে শরণার্থীদের নির্দয়ভাবে সরিয়ে দিয়ে সমালোচিত হয়েছিল। এর মধ্যে গত দু দিন আগে একজন কৃষ্ণাঙ্গকে তিন জন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্তৃক নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ পায়। এসব ঘটনার ছবি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হলে অস্বস্তিতে পড়ে দেশটির পুলিশ। এ দুটি ঘটনার পর প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ প্রশাসনের ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে।
সংবাদমাধ্যম প্রকাশিত ছবির মাধ্যমে পুলিশের ভাবমূর্তি সংকটে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে ফ্রান্সের নিম্নকক্ষে একটি আইন পাস হয়। এ আইনের ২৪ ধারায় বলা হয়েছে, 'পুলিশের শারীরিক ও মনস্তাত্বিক সততাপূর্ণ পেশাদারিত্বের ক্ষতিসাধনের উদ্দেশ্যে কর্তব্যরত অবস্থায় পুলিশের ছবি প্রকাশ করলে তা অপরাধ বলে বিবেচিত হবে'। নিম্নকক্ষে পাসের পর আইনটি এখন উচ্চকক্ষ সিনেটে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
এ আইনের বিরুদ্ধেই ক্ষুব্ধ হয়েছে দেশটিতে কর্মরত সংবাদকর্মীরা। এর পাশাপাশি দেশটির সচেতন নাগরিকরাও এ বিক্ষোভে যোগ দিয়েছে। বিক্ষোভ থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। 'আমাদের পুলিশের থেকে রক্ষা করবে কে', 'পুলিশি বর্বরতা বন্ধ করতে হবে' প্রভৃতি লিখে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে মানুষকে। এদিকে সরকারের পক্ষে থেকে দাবি করা হয়েছে এ আইনটি মোটেই সংবাদমাধ্যমের জন্য বিপজ্জনক কিছু নয়। তবে বিক্ষোভের জেরে দেশটির প্রধানমন্ত্রী জ্যান কাসটেক্স জানিয়েছেন, আইনটি পর্যালোচনার জন্য একটি কমিশন বসানো হয়েছে। সূত্র: বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান।
উত্তরণ বার্তা/এআর