শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ০৫:১৬
ব্রেকিং নিউজ

মা-বাবার কোল থেকে শিশু চুরি করে হত্যা মামলায় ৩ আসামির যাবজ্জীবন

মা-বাবার কোল থেকে শিশু চুরি করে হত্যা মামলায় ৩ আসামির যাবজ্জীবন

উত্তরণ বার্তা  প্রতিবেদক : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলায় ঘুমান্ত মা-বাবার কোল থেকে তিন মাসের শিশু আবদুল্লাহকে চুরি করে মুক্তিপণ নিয়ে হত্যার ঘটনায় তিন আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ সময় প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। রবিবার দুপুর সোয়া ১২টায় বাগেরহাটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ২-এর বিচারক মো. নূরে আলম এ রায় দেন। জনাকীর্ণ আদালতে চাঞ্চল্যকর এ রায় প্রদানকালে তিন আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
 
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলো- মো. হৃদয় ওরফে রাহাত হাওলাদার (২১), মো. মহিউদ্দিন হাওলাদার (২২) মো. ফায়জুল ইসলাম (২৮)। আসামিদের সবার বাড়ি বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার গুলিশাখালী গ্রামে। মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১১ মার্চ রাত ৩টার দিকে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার বিশারীঘাটা গ্রামের রেশমা বেগম তার তিন মাসের শিশু আবদুল্লাহকে নিয়ে স্বামী দলিল লেখক মো. সিরাজুল ইসলাম সোহাগের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়েন।
 
ঘুমন্ত মা-বাবার কোল থেকে দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে দুর্বৃত্তরা ওই শিশুকে চুরি করে নিয়ে যায়। ঘুম থেকে জেগে তারা দেখতে পান বিছানায় শিশু আবদুল্লাহ নেই। ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও নেই। জানালার গ্রিল ও দরজা খোলা রয়েছে। অন্য ঘরের সব দরজা বাইরে থেকে আটকিয়ে রেখেছে দুর্বৃত্তরা। দুধের শিশুটিকে কীভাবে চুরি হয় কেউ বুঝতে না পেরে পুলিশে খবর দেন। ওই দিনই অপহৃত শিশুটির বাবা বাদী হয়ে মোরেলগঞ্জ থানায় অজ্ঞাত অপহরণকারীদের নামে মামলা করেন। পরে শিশুটির মুক্তির জন্য মোবাইল ফোনে পরিবারের কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে দুর্বৃত্তরা।
 
শিশুটিকে ফিরে পেতে বাবা মো. সিরাজুল ইসলাম সোহাগ অপহরণকারীদের চাহিদা মতো ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণও পরিশোধ করে দেয়। ‘মুক্তিপণ’ দাবি করা মোবাইল ফোনটির সূত্র ধরে শিশুটিকে উদ্ধারে পুলিশ অভিযান শুরু করে। পরে প্রধান আসামি মো. হৃদয় ওরফে রাহাত হাওলাদারসহ অন্য আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। ঘটনার সাত দিন পর প্রধান আসামির মো. হৃদয়ের দেখানো মতে মোরেলগঞ্জ উপজেলার বিশারীঘাটা গ্রামের কাছারিবাড়ি এলাকার একটি মৎস্য খামারের টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
 
চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোরেলগঞ্জ থানার এসআই মো. আবদুল মতি দীর্ঘ তদন্ত শেষে গত বছরের ৫ অক্টোবর আদালতে তিন আসামির চার্জশিট দাখিল করেন। আদালত ২৫ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তিনজনকে যাবজজ্জীবন কারাদণ্ডের এ রায় প্রদান করেন।
মামলার বাদী শিশুটির বাবা দলিল লেখক মো. সিরাজুল ইসলাম সোহাগ, মা রেশমা বেগম ও রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি এপিপি রণজিৎ কুমার মণ্ডল রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে আসামিপক্ষের কৌঁসুলি মো. এনামুল হোসেন জানান, তার মক্কেল আদালতে ন্যায়বিচার পায়নি। সে কারণে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে বলেও জানান তিনি।
 
উত্তরণ বার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK
আরও সংবাদ