বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ০১:৫২
ব্রেকিং নিউজ

চিরনিদ্রায় শায়িত ড. ইনামুল হক

চিরনিদ্রায় শায়িত ড. ইনামুল হক

উত্তরণবার্তা বিনোদন ডেস্ক : চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য নাট্যজন ড. ইনামুল হক। মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) বাদ জোহর নগরীর বনানী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়। সর্বস্তরের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনে বেলা ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয় বরেণ‌্য অভিনেতা-নাট‌্যজন ড. ইনামুল হকের মরদেহ। তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হাজির হয়েছিলেন—তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, বরেণ‌্য অভিনেতা আবুল হায়াত প্রমুখ।
 
সোমবার (১১ অক্টোবর) অসুস্থ হয়ে পড়লে ড. ইনামুল হককে শান্তিনগর ইসলামী ব‌্যাংক হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আনুমানিক বেলা ৩টার দিকে মারা গেছেন তিনি। ধারণা করা হচ্ছে—হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন তিনি।
 
ড. ইনামুল হকের জন্ম ফেনী জেলায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে আসেন। ১৯৬৫ সালে প্রভাষক হিসেবে বুয়েটের রসায়ন বিভাগে যোগ দেন। ১৯৭০, ১৯৭৯, ১৯৮৭ সালে যথাক্রমে সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক এবং অধ্যাপক পদে উন্নীত হন। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে জনগণকে উদ্ধুদ্ধ করার প্রয়াসে বিভিন্ন আন্দোলনমুখী নাটকে অংশগ্রহণ করেন। নাট‌্যচর্চাকে হাতিয়ার করে ১৯৭০ সালে আইয়ুব খানের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে তৎকালীন অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নেন তিনি।
 
নটরডেম কলেজে পড়াশোনাকালীন প্রথম মঞ্চ নাটকে অভিনয় করেন ড. ইনামুল হক। ‘ভাড়াটে চাই’ শিরোনামের এ নাটক নির্দেশনা দেন ফাদার গাঙ্গুলী। ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়’-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন তিনি। দলটির ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এই দলের হয়ে প্রথম মঞ্চে অভিনয় করেন আতাউর রহমানের নির্দেশনায় ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রো’ নাটকে।
 
এরপর এই দলের হয়ে ‘দেওয়ান গাজীর কিসসা’, ‘নূরলদীনের সারাজীবন’সহ আরো অনেক নাটকে অভিনয় করেন তিনি। ১৯৯৫ সালে এই দল থেকে বেরিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন ‘নাগরিক নাট্যাঙ্গন’। দলটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন এই গুণী শিল্পী। তার অভিনীত প্রথম টেলিভিশন নাটক ‘মুখরা রমণী বশীকরণ’। এটি প্রযোজনা করেন মুস্তাফা মনোয়ার। নাট্যকার হিসেবে তার পথচলা শুরু হয় সে বছর। তার লেখা প্রথম নাটকের নাম ‘অনেক দিনের একদিন’। এটি প্রযোজনা করেছিলেন আবদুল্লাহ আল মামুন।
 
টেলিভিশনের জন্য ৬০টি নাটক রচনা করেছেন ড. ইনামুল হক। তার লেখা উল্লেখযোগ‌্য টিভি নাটক হলো—‘সেইসব দিনগুলি’ (মুক্তিযুদ্ধের নাটক), ‘নির্জন সৈকতে’, ‘কে বা আপন কে বা পর’ প্রভৃতি। মঞ্চের জন্য প্রথম ‘বিবাহ উৎসব’ নাটক রচনা করেন তিনি। নিজ দল নাগরিক নাট্যাঙ্গনের জন্য প্রথম রচনা করেন ‘গৃহবাসী’ নাটকটি। ১৯৮৩ সালে লেখা নাটকটি ঢাকার মঞ্চে আলোচিত হয়। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালে একুশে পদক লাভ করেন ড. ইনামুল হক। ২০১৭ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন বরেণ‌্য এই সাংস্কৃতিক ব‌্যক্তিত্ব।
উত্তরণবার্তা/সাব্বির
 
 

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK