শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ০৩:২১
ব্রেকিং নিউজ

ঠাকুরগাঁওয়ে ভালো দাম পেয়ে খুশি চা চাষি

ঠাকুরগাঁওয়ে ভালো দাম পেয়ে খুশি চা চাষি

দেশকণ্ঠ প্রতিবেদন, ঢাকা : গত বছর অস্বাভাবিকভাবে কমে গিয়েছিল কাঁচা চা পাতার দাম। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে চলতি বছরও দাম নিয়ে শঙ্কায় ছিলেন বাগান মালিকেরা। তবে সেই শঙ্কাকে পেছনে ফেলে চা পাতার দাম বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। এতে দারুণ খুশি চা চাষিরা। 
 
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া থানার দবির টি গার্ডেনের পরিচালক দবির উদ্দিন জানান, তিনি ছয় একর জমিতে ৩টি চা বাগান করেছেন। প্রতিবছর ৭ থেকে ৮ হাজার কেজি পাতা পাওয়া যায় ওই বাগান থেকে। পপুলার, সুলতান টি ফ্যাক্টরিসহ বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে পাতা সরবরাহ করেন তিনি। গতবার প্রতি কেজি পাতার দাম ছিল ১০ থেকে ১৪ টাকা। এবার প্রতি কেজি পাতা বিক্রি করেছেন ৩২ টাকা দরে। পাতার দাম পেয়ে মহা খুশি তিনি।
 
পপুলার টি ফ্যাক্টরির জেনারেল ম্যানাজার এ কে এম জাহিদুল হাসান (জাহিদ) বলেন, চলতি বছরে চায়ের উৎপাদন কমে যাওয়ায় অকশনে দাম অনেক বেড়ে গেছে। প্রচুর বৃষ্টি থেকে আবহাওয়ার আনুকূল্য পেয়ে চায়ের মানও এবার তুলনামূলক ভালো হয়েছে। এক্সপোর্ট কোয়ালিটির কারণেও এবার চায়ের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
 
বাংলাদেশ চা বোর্ড আঞ্চলিক কার্যালয় পঞ্চগড় সূত্রে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁওয়ে ৩০৬ জন নিবন্ধনকৃত চা চাষি রয়েছে। বেশিরভাগই বালিয়াডাঙ্গীতে আর সদর উপজেলাধীন রুহিয়া থানায় রয়েছে ১০ জন চা চাষি।
 
রাজাগাঁও ইউনিয়নের জয় টি গার্ডেনের সত্যাধিকারী খাদেমুল ইসলাম সরকার জানান, তিনি ২ একর জমিতে দুইটি বাগান করেছেন, পেয়েছেন চার হাজার কেজি পাতা। সেই পাতা ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন তিনি। 
 
তিনি আর জানান, তার বাগান দেখাশোনা করেন গণি মিয়া নামের এক ব্যক্তি। দাম বেশি পাওয়ার খুশিতে গণিকে তিনি নতুন সাইকেল উপহার দিবেন। এছাড়াও সর্বক্ষণ তাকে যারা উৎসাহ দিয়ে সব রকম সহযোগিতা করছেন তাদেরও খুশি করবেন তিনি।
 
বালিয়াডাঙ্গীর লাহিড়ী এলাকার চা চাষি আবুল কালাম আজাদ (মানিক) জানান, চা পাতার বর্ধিত দাম তাদেরকে চা চাষে অনুপ্রাণিত করছে। তবে তার অভিযোগ, মাঝে মাঝে জেলার একমাত্র চা পাতার ক্রেতা ও প্রক্রিয়াজাত কারখানা শাহবাজপুর গ্রীণ ফিল্ড টি ইন্ডাষ্ট্রিজের লোকজন সময়মতো চা পাতাটা কেনেন না, তাদের আচরণ অনেক সময় নীল চাষিদের মতো। একই অভিযোগ স্থানীয় চা চাষি কুতুব উদ্দিনেরও।
 
তবে এ প্রশ্নে শাহবাজপুর গ্রীণ ফিল্ড টি ইন্ডাষ্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফয়জুল ইসলাম হিরু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “পাতার মান মানসম্মত হলে আমরা চাষিদের কাছে চা পাতা কিনতে আগ্রহের সাথে অপেক্ষা করি।”
 
এদিকে, করোনাভাইরাসজনিত কারণে স্বাস্থ্য রক্ষায় আদা লাল চা পানের প্রবণতা বেড়েছে মন্তব্য করে অর্থনীতিবীদ অধ্যাপক শামীম হোসেন বলেন, “দেশ বিদেশের জার্নাল, বিভিন্ন ডাক্তার ও ভুক্তভোগীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করোনার সময়ে এ সংক্রান্ত পোস্ট ভিডিও দেখে, মানুষের মনে একটা বিশ্বাস জন্ম নিয়েছে, করোনা মুক্তিতে চায়ের একটা ভূমিকা রয়েছে। তাই এই গ্রীষ্মকালেও ঘরে ঘরে ঘন ঘন চা খাওয়ার প্রবণতাও বেড়েছে।”
 
ঠাকুরগাঁওয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশ চা বোর্ড পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন খামার সহকারী ছায়েদুল হক বলেন, “পাতার মূল্য বৃদ্ধিতে চা চাষিদের একটা বুদ্ধিদীপ্ত ভূমিকা কাজে লেগেছে, বিগত দিনে সকল বাগানের পাতা একসাথেই তোলা হতো, আর সে সুযোগে চা ক্রেতারা দাম কমিয়ে দিতেন। কিন্তু এবার বুদ্ধি করে তারা পর্যায়ক্রমে পাতা তুলেছে। এতে দামও চাষিরা দামও ভালো পেয়েছে।
 
দেশকণ্ঠ/অআ

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK