বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ০৩:০২

বিশেষ দলের সদস্যরাই বাসে আগুন দিয়েছে ভিডিও ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করা হচ্ছে সবাইকে গ্রেফতার আরো ১৭

বিশেষ দলের সদস্যরাই বাসে আগুন দিয়েছে  ভিডিও ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করা হচ্ছে সবাইকে  গ্রেফতার আরো ১৭

উত্তরণ বার্তা প্রতিবেদক : একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সদস্যরাই পরিকল্পিতভাবে রাজধানীতে বাসে আগুন দিয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছেন গোয়েন্দারা। তবে আগুনে গান পাউডার ব্যবহার করা হয়েছে কিনা, তা এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। তবে আগুন ধরাতে দাহ্য পদার্থের ব্যবহার হয়েছে, সেটা তারা নিশ্চিত। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, এই ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। গতকাল শনিবার এই ঘটনায় আরো ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ নিয়ে গ্রেফতারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৯ জনে। এদের মধ্যে ২৮ জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
 
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িত সবাইকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে। তিনি বলেন, এগুলো এরা সব সময়ই করে। কিন্তু কোনো জায়গায়ই সাকসেসফুল হয়নি। এবারই কয়েকটি বাসে এরা অগ্নিসংযোগ করেছে। যারা এ কাজে সম্পৃক্ত ছিল, যারা অগ্নিসংযোগ করেছে, তাদের সবাইকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে। এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ফোনালাপ যাচাই করা হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এগুলো বিশ্লেষণ করে যারা এর হোতা, অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
 
একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন স্থানের সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আমরা নিশ্চিত হয়েছি, একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত। যারা সরাসরি আগুনের সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদের আমরা গ্রেফতার করতে পারিনি। তাদের গ্রেফতারের জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
 
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে। আমাদের এই অভিযান চলবে। যারাই এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকুক না কেন, তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।
 
একজন ঊর্ধ্বতন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, ঘটনা বিশ্লেষণ করে আমরা দেখেছি, ২০১৪ সালে রাজধানীসহ সারাদেশে যে আগুনের ঘটনাগুলো ঘটেছিল, এর সঙ্গে বৃহস্পতিবারের আগুনের ঘটনার মিল রয়েছে। ফলে আমরা ধারণা করতে পারি, কীভাবে বা কারা এই আগুন দিয়েছে।
 
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, আমরা থানাপুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে তদন্ত করছি। এখন পর্যন্ত গান পাউডারের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে দাহ্য পদার্থের ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা এটা পরীক্ষা করার জন্য ফরেনসিক ল্যাবে পাঠিয়েছি।
 
দাহ্য পদার্থ হিসেবে কী ব্যবহার করা হয়েছে—জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসাইন বলেন, আমাদের কাছে এটা পরীক্ষার কোনো ল্যাব নেই। ফলে আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি না, কী দিয়ে আগুন দেয়া হয়েছে।
 
অনেকেই অভিযোগ করছেন, যারা ঘটনাস্থলে ছিলেন না তাদেরও আসামি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে না থাকলে কি তারা আসামি হতে পারেন না? এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক নুরুল হুদা বলেন, যাদের আসামি করা হয় তাদের সব সময় ঘটনাস্থলে থাকতে হবে এমন নয়। নির্দেশদাতারাও আসামি হতে পারেন। কিন্তু গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় সুনির্দিষ্ট কী ঘটেছে সেটা বলতে পারব না।
 
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র উপ-কমিশনার ওয়ালিদ হোসেনও বলেছেন, যারা ঘটনাস্থলে থাকেন, তাদেরই শুধু আসামি করতে হবে এমন কথা নেই। একটি মার্ডারের ঘটনায় যিনি খুনি তাকে আসামি করা হয়। কিন্তু নির্দেশদাতাকে প্রধান আসামি করা হয়। সেখানে তো নির্দেশদাতা সরাসরি খুনে জড়িত হন না।
 
উত্তরণ বার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK
আরও সংবাদ