বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ০৯:৫৬

ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অধ্যাদেশকে আইন করতে সংসদে বিল

ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অধ্যাদেশকে আইন করতে সংসদে বিল

উত্তরণ বার্তা প্রতিবেদক : ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডেরে বিধান রেখে সম্প্রতি জারি করা অধ্যাদেশটিকে আইনে পরিণত করতে সংসদে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) বিল-২০২০’ উত্থাপন করা হয়েছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা রোববার সংসদে বিলটি উত্থাপন করেন। পরে পরীক্ষা করে সাদদিনের মধ্যে সংসদে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য বিলটি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রীর বিলটি উত্থাপনের আগে সংসদে এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশটি তোলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সংসদ অধিবেশন না থাকাকালে জারিকৃত যে কোনো অধ্যাদেশ সংসদের প্রথম বৈঠকে উপস্থাপনের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। গত ১২ অক্টোবর মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পরদিন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ জারি করেন।

২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) উপধারায় বলা হয়, যদি কোনো পুরুষ কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন, তাহলে তিনি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং এর অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন। সংশোধিত আইনের খসড়ায় ৯(১) উপধারায় ‘যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’ শব্দগুলোর পরিবর্তে ‘মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’ শব্দগুলো প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।

আইনের ৯(৪) (ক) উপধারায় ছিল, ‘যদি কোনো ব্যক্তি কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করিয়া মৃত্যৃ ঘটানোর বা আহত করার চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন।’ এই উপধারা সংশোধন করে উপস্থাপিত বিলে ‘যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’ এর পরিবর্তে ‘মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’ শব্দগুলো যোগ করা হয়েছে।

বিলে অপরাধের শিকার ব্যক্তির পাশাপাশি ‘অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তির’ মেডিক্যাল পরীক্ষা করার বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া ৩২ ধারার সঙ্গে ৩২(ক) শিরোনামে নতুন একটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে বিলে।

সেখানে বলা হয়, এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি এবং অপরাধের শিকার ব্যক্তির ধারা ৩২ এর অধীন মেডিকেল পরীক্ষা ছাড়াও, উক্ত ব্যক্তির সম্মতি থাকুকবা না থাকুক, ২০১৪ সালের ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড (ডিএনএ) আইনের বিধান অনুযায়ী তার ডিএনএ পরীক্ষা করতে হবে।

বিলটির উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সামাজিক উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশের অগ্রসরমান ধারা আজ বিশ্বব্যাপী নন্দিত ও প্রশংসিত। বিদ্যমান আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নের ঊর্ধ্বগামী পরিক্রমণের মধ্যে দেশে নারী ও শিশু ধর্ষণের মত জঘন্য অপরাধ সংঘটন, সামাজিক গতিশীলতায় নেতিবাচক প্রভাব রাখাসহ সার্বিক সামাজিক উন্নয়নের ধারাকে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এইরূপ হীন অপরাধ দমনে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণার্থে দণ্ডারোপের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ শাস্তি বিধানের ব্যবস্থা গ্রহণ সময় ও পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনায় অত্যাবশ্যক।

উত্তরণ বার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK