উত্তরণ বার্তা ডেস্ক : বেগুনি রঙের উদ্ভাস নিয়ে এই গ্রীষ্মে ফুটেছে জারুল ফুল। জারুল নিম্নভূমির মাঝারি আকৃতির পাতাঝরা বৃক্ষ। জলাভূমি ছাড়া স্বাভাবিক শুষ্কতায়ও বাঁচে। শাখার অগ্রভাগে বিশাল মঞ্জরিতে উজ্জ্বল বেগুনি বর্ণের উচ্ছলতা জারুল ফুলের। ঘন সবুজ পাতার পটভূমিতে বিক্ষিপ্ত পুষ্পচ্ছটা সৌন্দর্যে অনন্য। জারুলের বৈজ্ঞানিক নাম Lagerstroemia speciosa, এটি Lythraceae পরিবারের উদ্ভিদ। জারুলের কাণ্ড নাতিদীর্ঘ, মসৃণ, ম্লান ধূসর এবং শীর্ষদেশ অজস্র শাখায় ছত্রাকৃতির। খসে পড়া বাকলের আঁকাবাঁকা চিহ্নে চিত্রিত। কাণ্ড অনেকটা পেয়ারার কাণ্ডের মতো। পাতা লম্বা, চওড়া এবং গাঢ় সবুজ। বর্ষা শেষে জারুলের বয়স্ক পাতা লাল হয়ে যায়। পত্রবিন্যাস বিপ্রতীপ। শীতকালে পাতা ঝরে পড়ে। জারুলের ছবিটি ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র তীরের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন উদ্যান থেকে তোলা।
নিরাভরণ শাখা বসন্তের শেষে আবার কচিপাতার উজ্জ্বল সবুজে ভরে ওঠে এবং পরপরই আসে ফুল ফোটার সময়। ফুলের পাপড়ি ছয়টি, এক ইঞ্চি লম্বা, কোমল। পুংকেশর অসংখ্য ও হলুদ রঙের। ফুলের কেন্দ্রে বহু খাটো পুংকেশর পরসপরের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে। বৃতি দৃঢ়, ধূসর সবুজ, রোমশ ও যুক্ত। ফল ডিম্বাকৃতির ও বৃতিযুক্ত। বীজ পক্ষল ও সহজে অংকুরিত হয়। লালচে রঙের জারুল কাঠ দৃঢ়, আর্দ্রতা সহিষ্ণু ও দীর্ঘস্থায়ী। ঘরের কড়ি বর্গা থেকে নৌকা, গরুর গাড়ি, চাষের যন্ত্রপাতি, সাধারণ আসবাবপত্র সবই এ কাঠ দিয়ে তৈরি করা যায়। জারুলের ভেষজগুণও রয়েছে। এর শিকড় বিরেচক, উত্তেজক ও জ্বররোধী। বীজ ঘুম আনয়নকারী।
উত্তরণ বার্তা/এআর