শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ০৩:৫৮
ব্রেকিং নিউজ

মুন্সীগঞ্জে তৈরি হয় স্পিডবোট কিনতে পারে সবাই

মুন্সীগঞ্জে তৈরি হয় স্পিডবোট  কিনতে পারে সবাই

উত্তরণ বার্তা প্রতিবেদক : মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাট থেকে বাংলাবাজার ও মাঝিকান্দি নৌরুটে পদ্মা নদীতে যাত্রী পারাপারে চার শতাধিক স্পিডবোট চলে। এসব স্পিডবোটের নিবন্ধন নেই। চালকের লাইসেন্সের দরকার হয় না। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিটিএ) ঘাটের ইজারা দিলেও স্পিডবোটের নিবন্ধন করেনি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি জেলায় এসব স্পিডবোট তৈরি হয়। এসব তৈরিতে ইঞ্জিন ও কাঁচামাল বিদেশ থেকে আমদানি করে। আর দেশের কারিগররা স্পিডবোটের কাঠামো তৈরি করে।

সরকারি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়াও বেসরকারি পর্যায়ের বিভিন্ন লোক এসব স্পিডবোটের গ্রাহক। যার সামর্থ্য আছে, সেই স্পিডবোট কিনে নৌরুটে যাত্রী পারাপার করছে। এজন্য শুধু ইজারাদারের সঙ্গে সমঝোতা করলে যথেষ্ট। নিবন্ধনের প্রয়োজন পড়ে না। মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কুমারভোগে অবস্থিত মেসার্স মুন ইন্টারন্যাশনাল তেমনি স্পিডবোট তৈরির কারখানা। সরেজমিন দেখা যায়, ৭-৮ জন কারিগর স্পিডবোট তৈরির কাজে ব্যস্ত। কথা হয় কারখানার মালিক মহসিন আহমেদের সঙ্গে।

মহসিন আহমেদ বলেন, তিনি ছাড়াও কুমারভোগ এলাকার খলিল ব্যাপারির একটি কারখানা, আবু বোর্ড বিল্ডার্স, সোনাকান্দা ডকসহ অনেক জায়গায় স্পিডবোট তৈরি করা হয়। স্পিডবোটের ইঞ্জিন মূলত জাপান থেকে আমদানি হয়। বাংলাদেশে কোনো ইঞ্জিন তৈরি হয় না। তিনি জানান, স্পিডবোটের বোর্ড তৈরির কাঁচামাল জিন ফাইবার মালয়েশিয়া, কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, চীন থেকে আমদানি হয়। দেশের কারিগররা স্পিডবোটের কাঠামো তৈরি ও রঙ করে মাত্র। একেক কারিগর একেক অংশ তৈরি করার পর সব অংশ জোড়া লাগিয়ে সম্পূর্ণ স্পিডবোট বানানো হয়। ১৫ জন কারিগরের দুই সপ্তাহ লাগে একটি বোট বানাতে।

স্পিডবোটের গ্রাহক ও দাম সম্পর্কে মহসিন আহমেদ বলেন, পদ্মা নদীতে যেসব স্পিডবোট চলাচল করে সেগুলো দেশের কারখানা থেকে কেনা হয়। কখনও নিজেদের মধ্যে স্পিডবোট মালিকেরা বেচাকেনা করে। ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত এসব স্পিডবোট বেচাকেনা হয়। তিনি আরও জানান, করোনা মহামারির কারণে এখন ব্যবসা খারাপ যাচ্ছে। গত ৯-১০ মাসে একটিও স্পিডবোট বিক্রি করতে পারেননি। শুধু কিছু পুরাতন স্পিডবোট মেরামত করে প্রতিষ্ঠানের খরচ চালিয়ে নিচ্ছেন।শিমুলিয়া ঘাটে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী পরিচালক শাহাদাত হোসেন জানান, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন অধিদপ্তর বেশ কয়েক বছর আগে প্রায় ২৫ ভাগ স্পিডবোটের নিবন্ধন করেছিল। তবে তাদের কাছে সেসবের কোনো নথি নেই। ৩ মে সোমবার ভোরে মাদারীপুরের শিবচরে পুরাতন কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটে পদ্মা নদীতে বালুভর্তি বাল্কহেডে একটি স্পিডবোট ধাক্কা লেগে ২৬ জন নিহত হয়। ওই ঘটনায় চরজানাজাত নৌপুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক লোকমান হোসেন বাদী হয়ে স্পিডবোটের মালিক ও চালকসহ চারজনকে অভিযুক্ত করে মামলা করেন।
উত্তরণ বার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK