বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ০৭:৫৬

রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে নিজ খরচে চলতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে নিজ খরচে চলতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

উত্তরণ বার্তা  প্রতিবেদক : সরকারি বাণিজ্যিক সংস্থাগুলোকে নিজেদের খরচে চলতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, সরকারি সংস্থা যেগুলো ব্যবসার জন্য তৈরি করা হয়েছে যেমন, ব্যাংক, বিমা, বিমান, বিটিসিএল– এগুলো নামেই কোম্পানি। তাদেরকে ভর্তুকি দিয়ে চালানো অর্থনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। তারা যেন নিজেরা নিজেদের খরচ চালাতে পারে। মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবনে থেকে ভার্চুয়ালি একনেকের সভায় অংশগ্রহণ করেন। সভা শেষে প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশ সাংবাদিকদের জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সভায় অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপন (১ম পর্যায়) প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৫ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড। কোম্পানি হওয়ার পরেও সরকারি বরাদ্দে প্রকল্প বাস্তবায়ন করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সরকারি প্রতিষ্ঠান হলেও এরা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। সরকারি প্রতিষ্ঠান যেগুলো ব্যবসা করছে, তারা যেন নিজেদের আয় থেকে ব্যয় করে।

একনেক সভায় মোট ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, এর মধ্যে ১টি সংশোধিত। নতুন প্রকল্পে বরাদ্দ ও সংশোধিত প্রকল্পে বাড়তি বরাদ্দ মিলিয়ে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ হাজার ৯০১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। এরমধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৮ হাজার ৯৯১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, বৈদেশিক উৎস হতে ঋণ ২ হাজার ৯৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ধরা হয়েছে ৮০৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। সভায় উপজেলা পর্যায়ে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম (২য় পর্যায়) প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬৪৯ কোটি টাকা। প্রকল্পটির আওতায় ১৮৬টি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রকল্পটির মাধ্যমে প্রতিটি উপজেলায় উন্মুক্ত খেলার মাঠ তৈরি করা হবে। স্টেডিয়ামের মতো ঘেরা থাকবে না, হাটার ও বসার জায়গা থাকবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এগুলো সকলের জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে। কোন রিজার্ভ থাকবে না। কোনো ক্লাবের বা ব্যক্তির আওতায় থাকবে না। ইউএনওরা এগুলো দেখভাল করতে পারবে। কিন্তু সবাই খেলার অধিকার পাবে, উন্মুক্ত রাখতে হবে।

সভায় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এগুলো হলো ১ হাজার ১৫৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্প এবং ১ হাজার ৪৫২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে তিস্তা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকার পুনর্বাসন ও সম্প্রসারণ প্রকল্প। সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্পের সংশোধনী আনা হয়েছে। সংশোধনীতে প্রকল্পের মেয়াদ ও খরচ দুটোই বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রকল্পটির মূল খরচ ছিল ১ হাজার ৩৬৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। প্রথম সংশোধনীতে ১৯৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা খরচ বাড়িয়ে করা হয়েছে ১ হাজার ৫৬১ কোটি ১৮ লাখ টাকা। আর ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। সংশোধনীতে মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে।

সভায় ৯১২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে সাইনবোর্ড-মোড়েলগঞ্জ-রায়েন্দা-শরণখোলা-বগী সড়কের ১৭তম কিলোমিটারে পানগুচি নদীর উপর পানগুচি সেতু নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটিতে কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকনমিক ডেভেলপমেন্ট প্রায় ৪শ কোটি টাকা ঋণ দেবে। একনেক সভায় অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হলো, ৫২৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের বহুতল ভবন নির্মাণ প্রকল্প, ৩৩৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে রাঙ্গামাটি জেলার কারিগর পাড়া হতে বিলাইছড়ি পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন ও ব্রিজ/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্প, ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুর জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, ৩ হাজার ৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বাপবিবোর বৈদ্যুতিক বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধন (খুলনা বিভাগ) প্রকল্প।
উত্তরণ বার্তা/এআর

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK