শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ০৩:৫০
ব্রেকিং নিউজ

ব্যর্থতা ঢাকতে মুমিনুলের এত অজুহাত

ব্যর্থতা ঢাকতে মুমিনুলের এত অজুহাত

উত্তরণ বার্তা ক্রীড়া ডেস্ক : হঠাৎ করে পাওয়া টেস্ট অধিনায়কত্ব সামলাতে বেশ হিমশিম খেতে হচ্ছে মুমিনুল হককে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র ম্যাচ খেলে সিরিজ জয়ই ছিল তার নেতৃত্বে একমাত্র প্রাপ্তি। ভারত ও পাকিস্তানে সিরিজ হারের পর দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হোয়াইটওয়াশ তার জন্য সবচেয়ে ছিল লজ্জাজনক। শেষ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কায় প্রথম ম্যাচের পর স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে বলেছিলেন, ওই ড্র তার সব যন্ত্রণা দূর করেছে। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে ২০৯ রানের বিশাল ব্যবধানে হারের পর নিজেদের ব্যাটিং, বোলিং বা ফিল্ডিং নিয়ে খুব একটা চিন্তিত দেখা যায়নি তাকে। বরং ব্যর্থতা ঢাকতে দিয়েছেন একের পর এক অজুহাত।

পাল্লেলেকেলে দ্বিতীয় টেস্টে বাজেভাবে হারের পর সংবাদ সম্মেলনে এসে তালগোল পাকানো ব্যাখ্যা দিয়েছেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল- ‘আমার মনে হয়েছে, এই ম্যাচের ৫০ শতাংশ ফল টসের সময়েই নির্ধারণ হয়ে গিয়েছিল’, ‘এসব উইকেটে ব্যাটিং মাঝামাঝি মানসিকতা নিয়ে এগোতে হয়’, ‘হয়তো একটু সমালোচনা হবে, অনেকেই অনেক কথা বলবে। এর ভেতরেও অনেক ইতিবাচক দিক আছে বলে আমার কাছে মনে হয়’, ‘টেস্টে উন্নতির জন্য একটু সময় লাগে, বেশি সুযোগ দিতে হয়।’। এমন অনেক কথাই বলেছেন তিনি।

টসের সিদ্ধান্তেই ম্যাচ হাতছাড়া! শ্রীলঙ্কা টস জিতে অর্ধেক এগিয়ে যায়, মুমিনুল এমন ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। কিন্তু বোলিংয়ে তো প্রথম দিনটা বাংলাদেশের হতে পারতো। ক্যাচ মিস আর বোলিংয়ে ধারাবাহিকতা না থাকায় শ্রীলঙ্কা রানের পাহাড় গড়েছিল। শ্রীলঙ্কার বোলিং আক্রমণকে অভিজ্ঞ বলা যাবে না। দলের মূল স্পিনাররা ছিলেন বাইরে। প্রবীণ জয়াবিক্রমা এই দলের চতুর্থ স্পিনার ছিলেন। তিন স্পিনারের চোটে তাকে খেলানো হয়। প্রথম সুযোগেই বাজিমাত জয়াবিক্রমার। ১১ উইকেট নিয়ে পাল্লেকেলে টেস্ট জয়ের নায়ক তিনি।

বলা হয়ে থাকে, বাংলাদেশের ব্যাটসমানরা স্পিনারদের বিপক্ষে যতটা সাবলীল, পেসারদের বিপক্ষে ঠিক ততটাই নড়বড়ে। অথচ পাল্লেকেলেতে শ্রীলঙ্কার স্পিন বিষে নীষে নীল হলেন মুমিনুলরা। সমস্যা কোথায়? মুমিনুলের সাদামাটা উত্তর, ‘আপনি ব্যাটিং ভালো করবেন না, তখন বাঁহাতি বা ডানহাতি যে স্পিনারই হোক ভালো করবে। আমার মনে হয় যে আমরা দলগতভাবে ভালো ব্যাটিং করতে পারিনি। আরেকটা বিষয় হলো এসব উইকেটে খুব বেশি ইতিবাচকও থাকা যায় না, আবার খুব বেশি নেতিবাচকও থাকা যায় না। মাঝামাঝি মানসিকতা নিয়ে এগোতে হয়। একটু ঝুঁকি নিয়ে খেলতে হয়।’

শ্রীলঙ্কা নিজেদের মাটিতে যেভাবে স্পিনার বাড়িয়ে পেসার নিয়ে খেলেছে সেখানে বাংলাদেশ হেঁটেছে উল্টোপথে। একাদশে তিন পেসার। সঙ্গে দুই স্পিনার। পরিকল্পনায় ঘাটতি ছিল কিনা জানতে চাওয়া হলে মুমিনুলের উত্তর, ‘যেটা আমার কাছে মনে হয়েছে, এসব উইকেটে খুব বেশি স্পিনার লাগে না। আমাদের তো দুজন খুব ভালো মানের স্পিনার ছিল, আমার মনে হয় না আরেকটা স্পিনার লাগতো। দুই স্পিনারই আমার মনে হয় যথেষ্ট।’

এ সিরিজের আগে ১০ টেস্টে ৯টিতেই বাজেভাবে হেরেছে বাংলাদেশ। পাল্লেকেতে প্রথম টেস্ট ড্র করে কিছুটা উন্নতির ছাপ দেখা যায়। কিন্তু দ্বিতীয় টেস্টে সেই একই পরিণতি। তিন বিভাগেই ব্যর্থ হয়ে বিব্রতকর হার সঙ্গী বাংলাদেশের। টেস্ট অঙ্গনে এত বছর কাটিয়ে দেওয়ার পরও কেন ধারাবাহিকতার অভাব? মুমিনুল সময় চাইলেন আরও, ‘টেস্টে উন্নতি করতে একটু সময় লাগে, বেশি সুযোগ দিতে হয়। যে কোনও জুনিয়র ক্রিকেটারের জন্য টেস্ট কঠিন, এখানে অভিজ্ঞতাটা গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয় যারা ধারাবাহিক হতে পারছে না তারা যদি আরেকটু সুযোগ পায় তাহলে ভালো হবে। এটা নিয়ে আমার ভাবনার কিছু নেই, ওরাই জানে ওদের কী করতে হবে।’ সিরিজে হারের পরও প্রাপ্তি খুঁজে বেড়াচ্ছেন অধিনায়ক। তামিম ইকবালের তিন হাফ সেঞ্চুরি, নাজমুল হোসেন শান্তর সেঞ্চুরি, নিজের সেঞ্চুরি, তাসকিন আহমেদের দ্যুতিময় বোলিং ও তাইজুল ইসলামের ৫ উইকেটে তৃপ্ত তিনি। দলের সামগ্রিক পারফরম্যান্সে উন্নতি না হলেও ছোট ছোট অর্জনে ভবিষ্যতে ভালো করতে আশাবাদী মুমিনুল।
উত্তরণ বার্তা/এআর


 

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK