বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা সময়: ২১:১৬
ব্রেকিং নিউজ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আগাম ভোট পড়ল ৫ কোটি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন  আগাম ভোট পড়ল ৫ কোটি

উত্তরণ বার্তা আন্তর্জাতিক ডেস্ক  :  যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ১০ দিন আগেই আগাম ভোট দিয়েছেন দেশটির পাঁচ কোটিরও বেশি নাগরিক। গত এক শতাব্দীর মার্কিন নির্বাচনের ইতিহাসে এবারেই সবচেয়ে বেশি আগাম ভোট দিয়েছেন মার্কিন ভোটাররা।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ১০ দিন আগেই আগাম ভোট দিয়েছেন দেশটির পাঁচ কোটিরও বেশি নাগরিক। গত এক শতাব্দীর মার্কিন নির্বাচনের ইতিহাসে এবারেই সবচেয়ে বেশি আগাম ভোট দিয়েছেন মার্কিন ভোটাররা।

শুক্রবার পর্যন্ত ব্যালটে সিল মেরেছেন ইতোমধ্যে পাঁচ কোটি ৩৫ লাখের বেশি ভোটার।

এদিকে করোনাভাইরাসের বাড়বাড়ন্তের মধ্যেও নির্বাচনী প্রচারণা আরও জোরদার করেছেন প্রধান দুই প্রার্থী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ডেমোক্রেটিক প্রার্থী জো বাইডেন।

তৃতীয় ও চূড়ান্ত টিভি বিতর্কের এক দিন পরই শুক্রবার ছয় ‘ব্যাটল গ্রাউন্ড’ রাজ্যের অন্যতম ফ্লোরিডায় চতুর্থবারের মতো প্রচারণা চালান ট্রাম্প। বসে নেই বাইডেনও।

বিতর্কের পরদিন নিজ রাজ্য ডেলাওয়ারে প্রচারণায় যোগ দেন তিনি। আগাম ভোট দেবেন প্রধান দুই প্রার্থীই। শনিবার (বাংলাদেশ সময় রোববার) ট্রাম্প ব্যাটেল গ্রাউন্ড রাজ্য ফ্লোরিডার ওয়েস্ট পাম বিচ কেন্দ্রে নিজের ভোট দেবেন। বাইডেন ভোট দেবেন আরেক গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য পেনসিলভানিয়ায়।

শেষ ১০ দিনে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যগুলোকে প্রচারণার কেন্দ্র বানিয়েছেন দুই প্রার্থী। বাইডেনকে সহায়তা করতে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা নির্বাচনী প্রচারণা করতে যাচ্ছেন ফ্লোরিডায়। ইতোমধ্যেই মিয়ামি ও পেনসিলভানিয়ায় বাইডেনের হয়ে প্রচারণা করেছেন ওবামা।

ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও মার্কিন নির্বাচনের প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা মাইকেল ম্যাকডোনাল্ড বলেন, প্রায় ২১ শতাংশ ভোটার ইতোমধ্যে তাদের ভোট প্রয়োগ করেছেন। যা ১৯০৮ সালের পর সর্বোচ্চ। টেক্সাসের ৭০ শতাংশ ইতোমধ্যে ভোট দিয়ে দিয়েছেন। ফ্লোরিডাতে ভোট দিয়েছেন ৪০ লাখ।

ভার্জিনিয়া, ওহাইও ও জর্জিয়াতে ১০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিতে দেখা গেছে। আগাম ভোট দাখিলে রেকর্ড করেছে উইসকনসিন, রাজ্যটিতে ১১ লাখ ভোটার আগাম ভোট দিয়েছেন।

২০১৬ সালের নির্বাচনে ১৩ কোটি ৭০ লাখ মার্কিনি ভোট দিয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের ধারণা এবারের নির্বাচনে মোট ভোট ১৫ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। নির্বাচনের সর্বশেষ সমীক্ষা বলছে, বাইডেন জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন।

তবে ব্যাটল গ্রাউন্ড রাজ্যগুলোতে দু’জনের অবস্থানই কাছাকাছি যা কিনা দুই প্রার্থীর হোয়াইট হাউসের ভাগ্য নির্ধারণ করবে।

ট্রাম্পের এইচ-ওয়ান বি, এল-ওয়ান ভিসা বাতিলে ক্ষতি ১০ হাজার কোটি ডলার : ট্রাম্পের এইচ-ওয়ান বি, এল-ওয়ান ভিসা বাতিলে যুক্তরাষ্ট্রের ১০ হাজার কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছে বলে এক রিপোর্টে উঠে এসেছে।

মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ব্রুকিংস ইন্সটিটিউটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত জুনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই দুই ক্যাটাগরির ভিসা বাতিলের পর অন্তত ৫০০ ফার্ম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ফার্ম বিদেশ থেকে দক্ষ আইটি লোকবল না আনতে পারায় তাদের কর্মকাণ্ডে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। দি প্রিন্ট।

এইচ-ওয়ান বি ভিসায় অধিকাংশ ভারতীয় আইটি পেশাজীবী যুক্তরাষ্ট্রে কাজের সুযোগ পেত। তারা এসব ফার্মে তাত্ত্বিক ও প্রযুক্তিগত সেবা দিত। এই দুই ক্যাটাগরি ভিসায় অন্তত দুই লাখ কর্মী যুক্তরাষ্ট্রে কাজের সুযোগ পেয়েছিলেন।

তাদের পরিবারের সদস্যরাও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও বিপাকে পড়েছেন। এত বিপুল কর্মী যে ধরনের উৎপাদনশীলতা, সময় মতো কাজ শেষ, উদ্ভাবনী ক্ষমতা ও বিনিয়োগে দক্ষতা দেখতে পেরেছিল তার বিকল্প উৎসের কোনো সন্ধান মেলেনি।

একই সঙ্গে কভিড মন্দায় এসব ফার্মগুলোর ওপর মন্দা আরো দীর্ঘ হচ্ছে। আমেরিকান ইমিগ্রেশন কাউন্সিল বলছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি যে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ভর্তির সময়সীমা সীমিত করতে চাচ্ছে এবং এটা করা হলে বিজ্ঞান গবেষণা ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে বড় ধরনের ঘাটতির সৃষ্টি হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময়সীমা কমালে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চতর শিক্ষা নেয়া কঠিন হয়ে পড়বে এবং এর ফলে বৈধ অভিবাসন ব্যবস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে। একই সঙ্গে শিক্ষার ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ব নেতার যে ভাবমূর্তি রয়েছে তাও ক্ষুণ্ন হবে।

অনেক বিদেশি শিক্ষার্থী অন্য দেশে পড়তে যাবে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ইমিগ্রেশন কাউন্সিলের বেথ ওয়ার্লিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার ক্ষেত্রে এক অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হতে পারে।

ওয়ার্লিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা চমৎকার লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছে। এখন তাদের ক্ষেত্রে ভিসা জটিলতা শুরু হলে এ ধরনের অপ্রয়োজনীয় উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা প্রদানে সক্ষমতা হ্রাস পাবে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় কিউবার ক্ষতি ১৪ হাজার চারশ’ কোটি ডলার : যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রতিবেশী দেশ কিউবার ১৪ হাজার চারশ’ কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছে।

গত ছয় দশকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা কিউবার অর্থনীতির এই পরিমাণ ক্ষতির কথা জানিয়েছেন কিউবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রড্রিগেজ। তিনি বলেন, কিউবার মতো ছোট অর্থনীতির দেশের জন্য এমন যুগ যুগ ধরে চলা নিষেধাজ্ঞা বড় ধরনের বোঝা। এ ধরনের নিষেধাজ্ঞাকে আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেন তিনি।

এছাড়া এ ধরনের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার প্রভাব গোটা বিশ্বেই পড়ে বলে জানান তিনি। নিষেধাজ্ঞার ফলে বাণিজ্যিক ও দর কষাকষির আইন ভঙ্গ হয়। এমনকি এমন নিষেধাজ্ঞা অমানবিকও বটে। ১৯৬০ এর দশকে কিউবায় সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের পর থেকে দেশটির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার খড়গ চলছে।

প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা নিষেধাজ্ঞা তুলে দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলেও ডোনাল্ড ট্রাম্প এসে আগের পথেই হাঁটেন। নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করেন। সর্বশেষ নতুন এক দফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন ট্রাম্প।

এতে মার্কিন নাগরিকদের ভ্রমণের ক্ষেত্রে কিউবার সরকারি সম্পত্তি ব্যবহারের ওপরও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়।

উত্তরণ বার্তা/এআর


 

  মন্তব্য করুন
     FACEBOOK